আজকে আমরা প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাতের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও ঔষধ সর্ম্পকে জানব।জানব কিভাবে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও ঔষধের মাধ্যমে প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাত ভালো করা যায়।
প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাতের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও ঔষধ
কোনিয়াম (Conium): কোনিয়াম প্যারালাইসিসের একটি সেরা ঔষধ। সাধারনত আঘাত পাওয়ার কারনে অথবা অতিরিক্ত পরিশ্রম-খাটুনির কারণে প্যারালাইসিস হলে তাতে কোনিয়াম প্রয়োগের কথা চিন্তা করা উচিত।
একোনাইট ন্যাপ (Aconitum nap) : সাধারণত ঠান্ডা বাতাস লেগে মুখে প্যারালাইসিস হলে একোনাইট। তবে একোনাইটের লক্ষন বিদ্যমান থাকলে যে-কান ধরনের প্যারালাইসিসেই একোনাইট উপযোগী। আক্রান্ত স্থান ঠান্ডা, অস্থিরতা, অসারতা, কম্পন ও ঝিন ঝিন অনুভুত হলে সেই রোগীর জন্য দ্রুত একোনাইটের প্রয়োগ জরুরী। রোগের প্রথম অবস্থায় একোনাইট ন্যাপ 3x প্রতি দুই ঘণ্টা অন্তর অন্তর ।
এস্টেরিয়াস রুবেন্স (Asterias Rubens): এস্টেরিয়াস রুবেন্স ব্রেন স্ট্রোকের একটি সেরা হোমিওপ্যাথিক ঔষধ। এই কারনে ব্রেন স্ট্রোকের পরে যেসব প্যারালাইসিস হয়, তাদেরও সেরা ঔষধ এস্টেরিয়াস রুবেন্স (Asterias Rubens)। বিশেষ করে জিহ্বার প্যারালাইসিস।
কষ্টিকাম (Causticum) : নির্দিষ্ট একটি অঙ্গ প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হলে তাতে কষ্টিকাম প্রয়ােগ করতে হয় ।যেমন - একটি আঙ্গুল বা একটি পা ইত্যাদি। শুষ্ক ও শীতল বায়ুতে এক স্নায়ুর পক্ষাঘাত,চোখের পাতা, জিহ্বা, ঠোটের পক্ষাঘাত, খেতে ও কথা বলতে অক্ষম, আক্রান্ত অঙ্গে বেদনা, স্পর্শ-অনুভুতি ক্ষমতা ঠিক থাকে, রোগীর পক্ষাঘাত আস্তে আস্তে বাড়ে, স্মৃতি শক্তি কমেয়া যায়। একোনাইট নেপ প্রয়োগের পরে কষ্টিকামের প্রয়োজন হয়। অনেক সময় দেহের ডান পাশে যেমন ডান হাত, ডান পা, ডান পা পড়ে যাওয়া, ডান হাত পড়ে যাওয়া, মুখের পক্ষাঘাত, মুখ বাঁকা হয়ে যাওয়া্ (প্যারালাইসি), এই ধরনের রোগীর জন্য কষ্টিকাম কার্যকরী।
কষ্টিকাম নিম্নশক্তি হলে প্রতিদিন দুই-তিন বার করে কয়েক সপ্তাহ, উচ্চ শক্তিতে খেলে দুই-এক সপ্তাহ পরপর এক মাত্রা করে । কথা অস্পষ্ট হয়ে যায় এমতাবস্থায় কষ্টিকাম ৩০ দিনে দুই মাত্রা দিলে রোগী ভাল হয়ে যায়, 200 শক্তি প্রয়োগ করলে বেশি ফল পাওয়া যায়, পুরাতন রোগে আরো উচ্চ শক্তি ব্যবহার করা যায়।
মার্ক সল (Merc Sol): রোগীর পক্ষাঘাত হাত হতে শুরু হয়ে নিচের দিকে প্রবাহিত হলে সেই রোগীর জন্য মার্ক সল প্রয়োজন। পাদ্বয়ে আরষ্টতা দেখা দেয়, নিজে পা নড়াতে না পারলেও অন্যরা নাড়াতে পারে, স্পাইনাল মেনিন জাইটিসের (Spinal meningitis) পরে পক্ষাঘাত হলে মার্ক সল উপযোগী ঔষধ। যে রোগীর নিম্নোক্ত লক্ষণ সহ মানসিক ও শারিরীক অবসন্নতা বিদ্যমান তার জন্য মার্কসল উপযোগী ঔষধ।
মার্ক সল ঔষধের প্রধান প্রধান লক্ষণগুলো হলাে প্রচুর ঘাম হয় কিন্তু রােগী আরাম পায় না, ঘামে দুর্গন্ধ বা মিষ্টি গন্ধ থাকে, কথার বিরােধীতা সহ্য করতে পারে না, ঘুমের মধ্যে মুখ থেকে লালা ঝরে, পায়খানা করার সময় কোথ, পায়খানা করেও মনে হয় আরাে রয়ে গেছে, অধিকাংশ রােগ রাতের বেলায বৃদ্ধি যায়, ঠান্ডা পানির জন্য পাগল, ঘামের কারণে কাপড়ে হলুদ দাগ পড়ে যায় ইত্যাদি, প্যারালাইসিস প্রথমে শরীরের উপরের অংশে দেখা দেয় এবং পরে ধীরে ধীরে নীচের দিকে যায় এরূপ লক্ষনে মার্ক সল।
নেট্রাম মিউর (Natrum Mur): ম্যালেরিয়া জ্বর অথবা কোন প্রকার সবিরাম জ্বরের পর পক্ষাঘাত বা অন্য কোন প্রকারের পক্ষাঘাতে হাত পা ভারী বোধ. নড়িতে পারে না, ডিপথেরিয়া, অতিরিক্ত স্ত্রী সম্ভোগের কারনে পক্ষাঘাত, অত্যধিক মানসিক অবসাদ, আবেগ, উত্তেজনা বশতঃ পক্ষাঘাত, নিম্নাঙ্গের পক্ষাঘাতে নেট্রাম মিউর (Natrum Mur)। কম্পিত হয় / ক্রমাগত চলাফেরায় কিছু উপশম, অতিশয় কোষ্টকাঠিন্য, গরমে কাতর , ঠান্ডায় থাকিতে চায়, মেরুদন্ডে স্পর্শকাতর ব্যাথা ( থেরেডি), শক্ত বিছানায় আরাম বোধ করে ,লবন পরিমানে বেশী খায় এরূপ লক্ষনের রোগীদের নেট্রাম মিউর অধিক উপযোগী।
একগারিকাস (Agaricus muscarius): একগারিকাস প্যারালাইসিসের একটি প্রধান ঔষধ। নিম্ন-অঙ্গের পক্ষাঘাতসহ বাহুদ্বয়ের কম্প, মেরুমজ্জার কোমলতার জন্য হাত-পায়ে পক্ষাঘাত। লাম্বার ও সেক্রাল প্রদেশে মেরুমজ্জার রক্তাধিক্যের কারনে প্যারালাইসিস এবং প্যারালাইসিস অংগে তীব্র ব্যথা, লাম্বার ও সেক্রাল প্রদেশে বেদনা (সায়াটিকা) (লাম্বার ও সেক্রাল রুটের স্নায়ুর সরবরাহের স্হানে প্রদাহকে সায়াটিকা বলে)। বসে থাকলে ব্যথা বৃদ্ধি, হাত ও পায়ে ঝিনঝিন ব্যাথা, একপাশের হাত অপর পাশের পা পক্ষাঘাত হইলে এগারিকাস উপযোগী।
একগারিকাসের লক্ষনঃ সারাক্ষন মাথা ঘোরানো, শিরঃপীড়া, শরীরের বিভিন্ন পেশীতে (বিশেষত চোখের ও মুখের) কম্পন এবং ঝাকুনি, জ্বরে অথবা ব্যাথায় প্রলাপ বকে, ছড়া-কবিতা বানিয়ে বলতে থাকে, শিশুদের মতাে ছেলে-মানুষি আচরণ, সামনে যাকে পায় চুম্বন করে, রাক্ষুসে ক্ষুধা, খাবার ভালাে মতাে না চিবিয়েই খেয়ে ফেলে, মাথা ঘােরাতে থাকে, পিছনের দিকে পড়ে যাওয়া প্রবনতা, বজ্রপাতের সময় রােগের মাত্রা বেড়ে যায়, পায়ের বুড়াে আঙুলের ফুলা-ব্যথা, ঠান্ডা বাতাসে হাঁটলে রােগের মাত্রা বেড়ে যায় ইত্যাদি লক্ষন থাকলে এগারিকাস প্রয়ােগ করুন।
ডালকামারা (Dulcamara): সাধারণত ভেজা, ঠান্ডা, স্যাতস্যাতে স্থানে/ফ্লোরে ঘুমানাের কারণে প্যারালাইসিস হলে ডালকামারা। জিহ্বা, ফুসফুস, হৃদপিন্ড, কণ্ঠনালী ইত্যাদির প্যারালাইসিসে ডালকামারা প্রযােজ্য। ঠান্ডা ও স্যাতস্যাতে আবহাওয়ায়, আবহাওয়া পরিবর্তনের পরিবেশে বসবাসের কারণে মেরুমজ্জা বা স্পাইনাল কর্ড এ রক্তাধিক্যের কারণে জিহ্বার আরষ্টতা বোধ (জিহ্বা নাড়াতে সমস্যা) ও পক্ষাঘাতে কথা বলিতে পারে না। মুত্রস্থলীর পক্ষাঘাত, র্দূগন্ধ ও অত্যাধিক স্লেষ্মাময় মুত্র। হাতে ও পক্ষাঘাতগ্রস্থ স্থানে শীতল বা ঠান্ডা অনুভব হলে সেই রোগীর জন্য ডল্কামারা উপযোগী। এক্ষেত্রে ডল্কামারা প্রয়োগের পরে রাসটক্স প্রয়োজনীয় ঔষধ।
রাসটক্স (Rhus Tox): অতিরিক্ত পরিশ্রম, পানিতে ভেজা, স্যাতসেতে স্থানে শয়ন অথবা টাইফয়েড জ্বরের কারনে পক্ষাঘাত হলে রাসটক্স উপযোগী। আর্দ্র ও শীতলতার জন্য মুখমন্ডলে পক্ষাঘাত, শিশুদের স্পাইনাল প্যারালাইসিস, হাত পা ও কোমরে প্রচন্ড ব্যাথা, কঠিন বিছানায় শুলে উপশম, খেতে অক্ষম এরূপ লক্ষন সহ পক্ষাঘাত / প্যারালাইসিসের জন্য রাসটক্স।
Lycopodium (লাইকোপেডিয়াম): লাইকোপেডিয়ামের প্রধান প্রধান লক্ষণ হলাে রােগ বিকাল ৪-৮টার সময় বৃদ্ধি পায়, এদের রােগ ডান পাশে বেশী হয়, রােগ ডান পাশ থেকে বাম পাশে যায়, এদের পেটে প্রচুর গ্যাস হয়, এদের সারা বছর প্রস্রাবের বা হজমের সমস্যা লেগেই থাকে, এদের দেখতে তাদের বয়সের চাইতেও বেশী বয়ঙ্ক মনে হয়, এদের স্বাস্থ্য খারাপ কিন্তু ব্রেন খুব ভালাে, এরা খুবই সেনসিটিভ এমনকি ধন্যবাদ দিলেও কেঁদে ফেলে ইত্যাদি ইত্যাদি। উপরের লক্ষণগুলাের দু'তিনটিও কোন প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাত রােগীর মধ্যে থাকলে লাইকোপেডিয়াম তার প্যারালাইসিস সারিয়ে দেবে।
এলুমিনা (Alumina): এলুমিনা প্যারালাইসিসের একটি সেরা ঔষধ বিশেষত যদি সাথে কোষ্টকাঠিন্য থাকে। এলুমিনার প্রধান প্রধান লক্ষনগুলো হলাে নরম পায়খানা কিন্তু তারপরও বের করতে কোথানি লাগে, সবসময় মাথাঘোরানি, জিনিসপত্রকে মনে হয় বৃত্তাকারে ঘুরতেছে, চোখের পাতার প্যারালাইসিস, টেরা চোখ, অন্ধকারে অথবা চোখ বন্ধ করে হাঁটতে পারে না, পায়ের তলায় অবসতা, পিঠে অথবা পায়ে মনে হয় পিপড়া হাঁটতেছে, মুখে মনে হয় মাকড়সার জাল আটকে আছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
Lobelia purpurascens : লােবেলিয়া প্যারালাইসিসের একটি উত্তম ঔষধ। সাংঘাতিক মাথাঘোরানি, মাথা ব্যথা, জ্বর, শারীরিক ও স্নায়বিক দুর্বলতা, ফুসফুসের প্যারালাইসিস ইত্যাদি লােবেলিয়ার প্রধান প্রধান লক্ষণ।
এ্যাসকুলাস গ্লেবরা (Aesculus Glabra): পায়ের পক্ষাঘাত এবং সংকোচন ভাব বিদ্যমান থাকলে সেই রোগীর প্রয়োগ দরকার।
এ্যাসকুলাস হিপ (Aesculus Hip) : হাতের পক্ষাঘাত, হাত উঠাতে পারে না, কোমরে দুর্বলতা ও অবশতার কারণে না চলতে পারলে এ্যাসকুলাস হিপ খুবই উপকারী ঔষধ।
জেলসিমিয়াম (Gelsemium): যে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত স্থানে রোগীর অনুভতি থাকে ও অনুভুতির প্রবলতা বৃদ্ধি পায় সেইসকল রোগীর জন্য জেলসিমিয়াম উপযোগী। শিশুদের পক্ষাঘাত, সারা পেশীর পক্ষাঘাত, চোখের পাতা উঠানো যায় না, কথা বলার সময় জড়তা (কথা জড়িয়ে যায়), হাত ও পা অবশ ও ভারী বোধ, ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যবহার করা যায় না, পায়ের পক্ষাঘাতের কারনে হাটতে গিয়ে টালমাতাল অবস্থা হয়, খাদ্য গিলতে কষ্ট হয়, লোকোমোটর এটাক্সি রোগের তীব্রতার সাথে ব্যাথা থাকে এরূপ লক্ষনে জেলসিমিয়াম। ডিপথেরিয়ার পরে পক্ষাঘাত হলে জেলসিমিয়াম উপযোগী ঔষধ।
এপিস মেল (Apis Mel): ডিপথেরিয়া, টাইফয়েড, মেনিঞ্জাইটিস প্রভৃতি রোগ ভোগের পর পক্ষাঘাত, দেহের একপাশে পক্ষাঘাত, অপর পাশে কম্প, দেহের নিচের অংশ নীল ও শীতল । যে রোগীর মাঝে এই লক্ষণগুলোসহ এপিস মেলের চারিত্রিক ও মানষিক লক্ষনের মিল পাওয়া যাবে সেইসব রোগীর জন্য এটি গুরুত্বপুর্ণ ঔষধ।
এপিস মেলের লক্ষনঃ অস্থিরতা, মন সবসময় হিংসায় ও সন্দেহে পূর্ণ, রোগ ডানদিকে শুরু হয়ে বামদিকে যায়, তাপ বা গরম থেকে এলার্জি বা ঘামের পর এলার্জি, গরম সহ্য করতে পারে না, গরম ঘরে বৃদ্ধি, খোলা বাতাসে, ঠান্ডা জলে গোছল, হাঁটা-চলা এবং অবস্থান পরিবর্তন করলে উপশম।
ব্যারাইটা কা্র্ব: বৃদ্ধদের পক্ষাঘাত, বোকা বুদ্ধিহীন , কিছু মনে রাখতে পারে না, শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ হয় না, মাথার খুলি আংশিক ভাবে উন্মুক্ত থাকে এবং লালা ঝড়ে, মস্তিষ্ক ও মেরু মজ্জা দুর্বল, হাত পায়ের কাপুনি, মুখের পক্ষাঘাতের জন্য ব্যারাইটা কার্ব উপযোগী।
চায়না: অত্যধিক রক্ত ও শুক্রক্ষয়জনতি কারণে পক্ষাঘাতগ্রস্থ রোগীদের জন্য চায়না উপযোগী।
সালফার: কোন চর্ম রোগ চাপা পড়ে, ডিপথেরিয়া, টাইফয়েড জ্বর, ঠান্ডা লাগার কারণে পক্ষাঘাত হলে সালফার উপযোগী। হাত-পায়ের পক্ষাঘাত সহ মুত্র অবরোধ ও নাভি পর্যন্ত অসার, মেরুদন্ডে চাপ দিলে ব্যাথা অনুভুতি, মেরুদন্ডের দুর্বলতার জন্য রোগী কুজো হয়ে চলে, বেলা এগারোটার দিকে পাকস্থলী খালি বোধ ইত্যাদি লক্ষনজনিত রোগীর জন্য সালফার উপযোগী ঔষধ।
আর্সেনিক এলবাম: আর্সেনিক এলবামের রোগীর পেশীসমুহ ক্রমাগত শীর্নতা অঙ্গাদির ক্রমাগত কম্পন / কাপুনি, মদ্যপায়ী রোগীর জন্য আরো উপযোগী। হাত-পায়ে ব্যাথা, আক্রান্ত পাশে শুতে পারে না, আক্রান্ত অঙ্গ চালনায় আরাম, অত্যধিক দুর্বলতা ও অবসবোধ। এগুলোই আর্সেনিক বিষের প্রতিষেধক। এই রোগ লক্ষণের সাথে আর্সেনিকের ধাতুগত মিল থাকলে আর্সেনিক এলবম অত্যন্ত কার্যকরী ঔষধ। মানসিকভাবে অস্থির, কিন্তু শারীরিকভাবে এতোই দুর্বল যে নড়াচড়া করতে পারে না।
ওপিয়াম এপোপ্লেক্সির পর পক্ষাঘাতসহ স্পর্শ অনুভুতি লোপ। বৃদ্ধ ও মদ্যপায়ী দের পক্ষাঘাত, যে রোগী নাক ডাকে ও চক্ষু অর্ধেক খোলা রাখে সেই রোগীর জন্য ওপিয়াম উপযোগী।
ফসফরাস: মস্তিষ্ক ক্ষয়, স্পাইনাল হাইপারট্রফিক প্যারালাইসিস। অতিরিক্ত স্ত্রী সঙ্গম, টাইফয়েড জ্বরবশতঃ সন্তান প্রসবের পরে পক্ষাঘাত। প্রায়ই মেরুদন্ডে অসহ্য বেদনা। আক্রান্ত পেশীসমুহের সংকোচন। আক্রান্ত অঙ্গের অত্যধিক উত্তাপ বোধ কিন্তু স্পর্শ অনুভুতি লোপ পায়।
নাক্স ভোম: এপোপ্লেক্সিজিয়া, ডিপথেরিয়া, অতিরিক্ত মদ্যপান, স্ত্রীসঙ্গম অথবা আর্সেনিক বিষজনিত নিম্নাঙ্গের পক্ষাঘাত, অলস রোগীর জন্য নাক্স ভোম উপযোগী। পক্ষাঘাতগ্রস্থ অঙ্গ শীতল অসাড় ও শীর্ণ, অসম্পুর্ন পক্ষাঘাত, গতি শক্তি সম্পূর্ন শেষ হয় না, কিন্তু আক্রান্ত অঙ্গ নড়াতে গেলে কম্পন শুরু হয়, হাটার সময় পা টেনে নিতে হয়, পা উঠাতে পারে না, মদ্যপায়ীদের হাতের কম্পসহ পক্ষাঘাত রোগীর জন্য নাক্স ভোম উপযোগী ঔষধ।
লিডাম পাল: পক্ষাঘাত পা থেকে উপরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এমন লক্ষনে লিডাম পাল উপযোগী।
প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাতের বায়োকেমিক চিকিৎসা ও ঔষধ
ক্যালি ফস (Kali Phos) : সকল প্রকার প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাতের প্রধান বায়োকেমিক ঔষধ। লক্ষন অনুযায়ী হোমিওপ্যাথিক ঔষধের সাথে বাইওকেমিক ঔষধ পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করলে আরো বেশি উপকার হয়।
সেবন বিধি : পাওয়ারঃ 6x বা 12x, পরিমানঃ ২-৪ বড়ি এক মাত্রা বয়স অনুপাতে দিনে দুই বার।
ক্যালকেরিয়া ফস (Calcarea Phos) : রক্তশূন্য, দূর্বল রোগীদের ঠান্ডা লেগে পক্ষাঘাত, আক্রান্ত স্থান ঠান্ডা ও আক্রান্ত স্থানে পিপড়া হাটার মত অনুভূতিতে ইহা অব্যর্থ। পক্ষাঘাতে ক্যালকেরিয়া ফস প্রধান বায়োকেমিক ঔষধ।
সেবন বিধি : পাওয়ারঃ 6x বা 12x, পরিমানঃ ২-৪, ৪-৬ টা বড়ি এক মাত্রা। বয়স অনুপাতে দিনে দুই থেকে তিনবার।
ম্যাগনেশিয়া ফস (Magnesia Phos) : মাথা ও হাত পা কাঁপতে থাকে, আক্ষেপ লক্ষনযুক্ত পক্ষাঘাতে ম্যাগনেশিয়া ফস উপকারী। ক্যালি ফসের সাথে পর্যায়ক্রমে সেবনে আরো অধিক উপকার হয়।
সেবন বিধি : পাওয়ারঃ 3x বা 6x, পরিমানঃ ২-৪ বড়ি এক মাত্রা বয়স অনুপাতে দিনে চার বার গরম জলসহ।
প্যারালাইসিস / পক্ষাঘাতের বায়োকেমিক ঔষধ
1. Cal Flour-200x
2. Cal Phos-200x
3. Meg Phos-200x
4. Kali-Phos-200х
5. Natrum Mur-2