আজকে আমরা শিশু-বাচ্চাদের ও বৃদ্ধ সহ সকল বয়সের মানুষের দিনে বা রাতে বিছানায় প্রস্রাবের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও ঔষধ সর্ম্পকে আলোচনা করব।
লক্ষন মিলে গেলে প্রাপ্ত বয়স্করাও বাচ্চাদের ও বাচ্চারাও প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য নির্বাচিত ঔষধ সেবন করতে পারবে, তাই পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।
বিছানায় প্রস্রাবের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও ঔষধ
ক্রিয়োজোট (Kreosote): যেসব রোগী মনে করে যে সে বাহিরে প্রস্রাব করছে কিন্তু ঘুম থেকে উঠে দেথে যে নিজের বিছানায়ই প্রস্রাব করেছে, সহজে জাগানো যায় না, বিছানায় প্রস্রাব করার পরেও ঘুম থেকে জাগ্রত হয় না, প্রস্রাবে ভিজেই ঘুমাতে থাকে।
দিনই জোর করে হলেও প্রস্রাব করে শয়ন করার পরও শয়নের পর পরই প্রস্রাব করে ফেলে। বিছানায় প্রস্রাব করে অপরাধ বোধ করে এরূপ লক্ষনের রোগীর জন্য ক্রিয়োজোট (Kreosote) প্রয়োজন ।
বিছানায় প্রস্রাব করার পরেও রোগী ঘুম থেকে জেগে না উঠলে , ৩০/২০০ শক্তির ঔষধ দিনে দুই মাত্রা সেব্য। রাতে ঘন ঘন প্রস্রাবের জন্য ক্রিয়োজোট (Kreosote) উত্তম কাজ করে।
রোগীর প্রস্রাব করার জন্য হঠাৎ তাড়াহুড়ো হয় যে তাদের বাথরুমে যাওয়ার জন্য বিছানা থেকে নামার জন্য পর্যাপ্ত সময় নেই, এই লোকেরা রাতের প্রথম অংশে তাদের বিছানা ভেজাতে থাকে, কখনও কখনও তাদের স্বপ্ন হবে যে তারা প্রস্রাব করছে এসব লক্ষনে ক্রিয়োজোট 200
রেডিয়াম ব্রোম (Radium Brom): শয্যা মূত্ররােগে প্রায় ক্ষেত্রে একমাত্রা রেডিয়াম ব্রোম (Radium Brom) ১০এম এবং রােগ বহু বছরের পুরনাে হলে ৫০ এম বা সি. এম ফলপ্রদ। ~ডাঃ কে. ডি. চৌধুরী
কষ্টিকাম (Causticum): ঘুমের মধ্য অসাড়ে প্রস্রাব করে, কিছুই জানতে পারে না। খুব নম্র। তিরঙ্কার করলে কেঁদে ফেলে। হাচি কাশির সময় ২/১ ফোটা প্রস্রাব বের হওয়ার অভ্যাসে কষ্টিকাম (Causticum) ২০০, ১০০০।
এসিড বেন্জোয়িক (Benzoic Acid): বিছানায় প্রস্রাব করে এবং রোগীর প্রস্রাবে ঘোড়ার প্রসাবের মত দুর্ঘন্ধ থাকে তার জন্য এই ঔষধটি অতি প্রয়োজন। ৩০ ও ২০০ শক্তির ঔষধ দিনে দুই মাত্রা সেব্য।
রাস এরোমেটিক (Rhus Aromatic Q ): অধিক পরিমানে প্রস্রাব, বিছানায় প্রস্রাব করা, প্রস্রাবের বেগ ধরে রাখতে না পারা,অনবরত ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব ।
টিউবার বােভি (Tuberculinum Bovinum) - কোন ঔষধে বিছানায় প্রস্রাব করা বন্ধ না হলে এবং বংশে ক্ষয় রােগের ইতিহাস থাকলে টিউবার বােভি (Tuberculinum Bovinum) ১০০০ হতে তদুর্ধ শক্তি প্রয়ােজ্য।
শিশু বা বাচ্চাদের বিছানায় প্রস্রাবের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ও ঔষধ
রাস-এরোমেটিক (Rhus – Aromatica): শিশুদের বিছানায় প্রস্রাবে রাস-এরোমেটিক (Rhus – Aromatica), দিনে ৩ বার ৫ ফোটা করে অব্যর্থ ফল দেয়।
সিনা (Cina) : ক্রিমিতে আক্রান্ত শিশুরা যদি ঘুমের ঘোরে বিছানায় অসারে প্রস্রাব করে এবং সর্বদা ফোটা ফোটা প্রস্রাব করে তাদের জন্য সিনা দেয়া প্রয়োজন।২০০ ও ওয়ান এম শক্তির ঔষধ সকাল বিকাল দুই মাত্র সেব্য। শিশু মাঝে মাঝেই নাক চুলকায় বা বালিশে নাক ঘষে। ঘুমের মধ্য দাঁত কড়কড় করে। অত্যধিক আবদারপরায়ণ। অনবরত এটি ওটি চায়। দিলেও সন্তুষ্ট হয় না। আবার আর কিছু খায়। অত্যধিক ক্ষুধা ও খায়। জিহ্বা পরিষ্কার এমন শিশু বিছানায় প্রস্রাব করলে সিনা (Cina) ২০০, ১০০০ প্রয়ােজ্য।
কষ্টিকাম (Causticum) : শিশু প্রথম ঘুমেই বিছানায় প্রস্রাব করে কষ্টিকাম তাদের পরম বন্ধু। শীতকালে বিছানায় প্রস্রাবের প্রবনতা বেশি হলে কষ্টিকাম উত্তম ঔষধ। বিছানায় প্র্রস্রাবের চিকিৎসার কথা মনে হলেই এই ঔষধের নাম স্মরন করা হয়। ৩০ বা ২০০ শক্তির ঔষধ দিনে দুই মাত্রা সেবন করতে হয়।
ঘুমের মধ্য অসাড়ে প্রস্রাব করে, কিছুই জানতে পারে না। শিশু / বাচ্চা খুব নম্র। তিরঙ্কার করলে কেঁদে ফেলে। হাচি কাশির সময় ২/১ ফোটা প্রস্রাব বের হওয়ার অভ্যাসে কষ্টিকাম (Causticum) ২০০, ১০০০
ক্রিয়োজোট (Kreosote): যেসব বাচ্চারা মনে করে যে সে বাহিরে প্রস্রাব করছে কিন্তু ঘুম থেকে উঠে দেথে যে নিজের বিছানায়ই প্রস্রাব করেছে, সহজে জাগানো যায় না, বিছানায় প্রস্রাব করার পরেও বাচ্চা ঘুম থেকে জাগ্রত হয় না, প্রস্রাবে ভিজেই ঘুমাতে থাকে।
দিনই জোর করে হলেও প্রস্রাব করিয়ে শোয়ানো তবুও শয়নের পর পরই প্রস্রাব করে ফেলে। বিছানায় প্রস্রাব করে অপরাধ বোধ করে, শিশু ভয়ানক শীতকাতর এরূপ লক্ষনের রোগীর জন্য ক্রিয়োজোট (Kreosote) প্রয়োজন । ৩০/২০০ শক্তির ঔষধ দিনে দুই মাত্রা সেব্য।
সিপিয়া (Sepia) : যে বাচ্চা প্রথম ঘুমেই বিছানায় প্রস্রাব করে এবং প্রস্রাবে দুর্ঘন্ধ থাকে তার জন্য সিপিয়া পরম বন্ধু। বিশেষ করে মেয়েদের বিছানা প্রস্রাবের ক্ষেত্রে সিপিয়া ভালো কাজ করে। ৩০ বা ২০০ শক্তির ঔষধ দিনে দুই মাত্রা সেব্য।
সালফার (Sulphur) : সোরার প্রবনতা বা সুপ্ত সোরার বহিঃপ্রকাশ, গোসলে অনিহা, মিস্টি ও মশলা জাতীয় খাবার পছন্দ , যে সকল বাচ্চারা অতিরিক্ত দুষ্ট, বদমেজাজি এবং রাতের দ্বিতীয়ার্ধে বিছানায় প্রস্রাব করেন তাদের ক্ষেত্রে কার্যকরী।
মেডোরিনাম (Medorrhinum): সাইকোসিস ধাতুর রোগী এবং সুনির্বাচিত ঔষধ ব্যর্থ হলে মেডোরিনাম কার্যকরী, মেডোরিনামের শিশুরা দিনের বেলায় ঘুমালেও প্রস্রাব করে দেয়। রাত্রে বিছানায় প্রস্রাব করে। প্রস্রাব খুব দুর্গন্ধযুক্ত। রক্তশুন্য, শুষ্ক, শীর্ণ দূর্বল স্মৃতিশক্তি সম্পন্ন, খর্বাকৃতি ও স্থূলবুদ্ধি বিশিষ্ট শিশু। সে বাতাস চায় কিন্তু সে ঠান্ডা সহ্য করতে পারে না।
গনােরিয়া চাপা পড়া পিতামাতার সন্তানদের বিছানায় প্রস্রাব করার মেডোরিনাম (Medorrhinum) উৎকৃষ্ট ঔষধ । শিশুর স্মরণশক্তি একবারেই কম। পড়ে মনে রাখতে পারে না। অংক মােটেই বুঝে না। প্রস্রাবে খুব দুর্গন্ধ। ক্ষুধা ও পিপাসা বেশী। দেহ শীর্ণ ও বামন।
সিফিলিনাম (Syphilinum) : সিফিলিটিক মায়াজমের শিশুরা রাত্রে ঘুমানোর সাথে সাথেই প্রস্রাব করে দেয়, এবং রাত্রের মধ্যে কয়েকবার বিছানায় প্রস্রাব করে, মুখে লালা জমার প্রবনতা এবং মুখে দুর্গন্ধ হয়।
স্যানিকিউলা (Sanicula) : দিনের বেলায় যে সমস্ত শিশু বাচ্চারা কাপড় খুলতে খুলতে বা বিছানা হতে নামতে নামতেই প্রস্রাব করে ফেলে সেই সমস্ত শিশুদের রাত্রে বিছানায় প্রস্রাব করার ক্ষেত্রে ব্যবহার্য্য। প্রস্রাব করা স্থানে লালাভ দাগ পড়ে। তার মলের এক অদ্ভুত লক্ষণ এই যে, মল তার চার কোনা বিশিষ্ট হয়। শিশুর ঘাড়ে অত্যধিক ঘাম হয় এরকম লক্ষন ও বৈশিষ্ট্যে স্যানিকিউলা (Sanicula) ৩০, ২০০, ১০০০
সার্সাপেরিলা (Sarsaparilla): যে সমস্ত শিশু বাচ্চারা জাগ্রত অবস্থায় না দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে পারে না, বসে প্রস্রাব করতে গেলে ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব নির্গত হয়, তাদের বিছানায় প্রস্রাব করার ইহা ভাল ঔষধ। জাগ্রত অবস্থার না দাঁড়ালে ভালভাবে প্রস্রাব না হওয়া অথচ শয়ন ও নিদ্রাঘােরে অসাড়ে প্রস্রাব হওয়া এর বিশেষত্ব। প্রস্রাব শেষ হওয়ায় প্রাক্কালে ভয়ানক যাতনা ও বিদ্যুৎ প্রবাহের ন্যায় শরীর ঝাকি দেয়াও এর আর এক বিশেষত্ব। এরূপ লক্ষন বৈশিষ্ট্যে সার্সাপেরিলা (Sarsaparilla) ৩০, ২০০, ১০০০
অ্যাসিড ফস (Acid Phos) : স্নায়ুতন্ত্রের কারণে মানসিক ও শারীরিক অক্ষমতা (রাতে বিছানায় মূত্রত্যাগ) নিয়ন্ত্রণ করতে উপযোগী।
ইকুইজেটাম (Equisetum) : কোন ঔষধ কাজ না করলে ইকুইজেটাম (Equisetum) ৬ শক্তি দিনে তিন বার সেব্য।
ক্রিমি থাকিলে সিনা (Cina Maritima) ২০০ বা সােমরাজ Q, ৫ ফোটা করিয়া দিনে ৪বার কিছুদিন সেবনীয়। ~ ডাঃ প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়
ব্লুমিয়া ওডাে (Blumea Odorata) ২x (ডাঃ কাসিং) দিনে ৩ বার ৩ ফোটা করে।
খুজা (Thuja Occidentalis) :আচিলযুক্ত বা লাল তিলওয়ালা শিশুদের বিছানায় প্রস্রাব করা ব্যাধিতে খুজা (Thuja Occidentalis) ২০০, ১০০০।
ব্যাসিলিনাম (Bacillinum): শিশু বা বালকদের শয্যামূত্রের ক্ষেত্রে ভালাে ওষুধ ব্যাসিলিনাম (Bacillinum)। ~ ডাঃ ফুবিস্টার (Foubister)
শিশুর বিছানায় প্রস্রাবের বায়োকেমিক চিকিৎসা ও ঔষধ
নেট্রাম ফস ( Natrum Phos): ক্রিমিতে আক্রান্ত শিশুরা বিছানায় প্রস্রাব করলে নেট্রাম ফস – 3X; ১/৪ বড়ি দিনে তিন বার বয়স অনুসারে সেব্য
নেট্রাম সালফ ( Natrum Sulph): শিশুরা বিছানায় প্রস্রাব করলে নেট্রাম সালফ – 6X; ১/৪ বড়ি দিনে তিন বার বয়স অনুসারে সেব্য
ক্যালকেরিয়া ফস (Calcarea phos): রক্ত শুন্য দুর্বল পুষ্টিহীন শিশুর বিছানায় প্রস্রাব বন্ধের জন্য ক্যালকেরিয়া ফস- 6x বা 12; ১ /৪ বড়ি দিনে তিন বার বয়স অনুসারে সেব্য
কেলি ফস (Kali phos): স্নায়ুবিক দুর্বল শিশুর জন্য কেলি ফস 3x বা 6x , ১ /৪ বড়ি দিনে তিন বার বয়স অনুসারে সেব্য।
ডাঃ মোঃ আঃ হান্নান মিয়া (বি,এ)
ডি.এইচ.এম.এস (ঢাকা)
অহনা ভিলা, ধানুয়া কলেজ পাড়া, শিবপুর, নরসিংদী
সিংহশ্রী (বট তলা) চৌরাস্তা, ফালুমাস্টারের বাড়ি, কাপাসিয়া, গাজীপুর।
মোবাইলঃ ০১৭৩৯-৬৮২৬৯২, অথবা বার্তা পাঠান
(প্রতি শনিবার যোগাযোগ সাপেক্ষে রোগী দেখা হয়)