সজিনা গাছের পাতা, ফুল ও ফল (ডাটা) তরকারি হিসেবে খুব সুস্বাদু ও স্বাস্থকর। সজিনা ডাটার বাজার মূল চড়া। তাই সজিনা গাছ পরিকল্পিতভাবে রােপন করলে স্বাস্থ্যরক্ষার পাশাপাসি আর্থিকভাবেও বেশ লাভবান হওয়া যায়।
সজিনা গাছের পুষ্টি ও ভেসজ শুণ, রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা তথা উপকারিতা অপরিসীম। এগাছের সব অঙ্গে ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ। এ বিষয়ে সাধারণ একটি তথ্যপঞ্জি নিম্নোক্তভাবে তুলে ধরা হলঃ
ব্যাথানাশক হিসেবে সজিনা
শরীরের কোনো স্থানে ব্যথা হলে বা ফুলে গেলে সজিনার শিকড়ের প্রলেপ দিলে ব্যথা ও ফোলা সেরে যায়।
কান ব্যথা : সজিনার শিকড়ের রস কানে দিলে কানের ব্যথা সেরে যায়।
মাথা ব্যথা : সজিনার আঠা দুধের সাথে খেলে মাথা ব্যথা সেরে যায়। আঠা কপালে মালিশ করলে মাথা ব্যথা সেরে যায়।
তরকারী হিসেবে সজিনা
সজিনা তরকারী হিসেব বেশ সুম্বাদু। এটা খাওয়ার ফলে পেটে গ্যাস জন্মায় না এবং সব ধরনের ব্যথা, কাশি, লাঘবসহ নাক মুখ থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে।
সজিনা গাছের পাতাকে বলা হয় অলৌকিক পাতা। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুষ্টিকর হার্ব।
রোগ নিরাময়কারী হিসেবে সজিনা
সজিনা শরীরের প্রতিরোধক ব্যবস্থা শক্তিশালী করে। শরীর থেকে বিষাক্ত দ্রব্য, ভারি ধাতু অপসারণ এবং শরীরে রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপি নিতে সহায়তা করে।
ইন্টেস্টাইন ও প্রোস্টেট সংক্রমণ : সজিনা বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে। শ্বাসকষ্ঠ, মাথা ধরা, মাইগ্রেন, আর্থাইটিস এবং চুলপড়া রোগের চিকিৎসায় ও সজিনা কার্যকর ভূমিকা রাখে।
ফোঁড়া সারায় : সজিনার আঠার প্রলেপ দিলে ফোঁড়া সেরে যায়।
সজিনার ডাটা ও ফুলের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা
কোষ্ঠকাঠিন্য ও দৃষ্টিশক্তি : সজিনার ফুল কোষ্ঠকাঠিন্য দোষ দূর করে এবং দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।
সজিনা ফুল দুধের সাথে রান্না করে নিয়মিত খেলে কামশক্তির বৃদ্ধি ঘটে। এর চাটনি হজমশক্তি বৃদ্ধি করে।
গেঁটে বাত : সজিনার ডাটা নিয়মিত রান্না করে খেলে গেঁটে বাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
ক্রিমিনাশক ও টিটেনাস : সজিনার কচি ডাটা ক্রিমিনাশক, লিভার ও প্লীহাদোষ নিবারক, প্যারালাইসিস ও টিটেনাস রোগে হিতকর।
গবেষকরা সজিনা পাতাকে বলে থাকেন নিউট্রিশন্স সুপার ফুড এবং সজিনা গাছকে বলা হয় মিরাক্কেল ট্রি।
সজিনার যাদুকারী পাতা,মুল, ছাল ও রসের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা
সজিনার মূল বিষাক্ত হতে পারে, তাই সতর্কতা-টি পড়ুন
সজিনা পাতার গুড়া সেবনে রক্তের শর্করা এবং কোলস্টারেল কমে যায়।
সজিনা পাতা সামান্য পানি দিয়ে বেটে এর রস সকাল-বিকাল চা-পামচের দুই চামচ পরিমান খেলে উচ্চরক্তচাপ কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
যদি চোখে ব্যথা হয় বা চোখ দিয়ে পানি পড়ে, এ ক্ষেত্রে সজিনা পাতার সিদ্ধ পানি দিয়ে (পানি ঠান্ডা করে) ধুয়ে ফেললে রােগ উপসম হয়।
সজিনা মূল/ গাছের ছাল পিষে ক্ষতন্থানে লাগালে শরীরের দাদ রােগ ভাল হয়। তবে প্রতিদিন নয়
তরকারী হিসেবে সজিনা পাতার ঝােল খেলে সর্দি -জ্বর ভাল হয়।
কৃমিনাশক হিসেবেও সজিনার ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সজিনার ছাল ও মূলের রস নিয়মিতভাবে ৩/৪ দিন খেলে শরীর কৃমিমুক্ত হয়ে যায়। ভেষজ ওষুধ হিসেবে সজিনা পরম এক উপকারী বন্ধু।
মূত্রপাথরি ও হাঁপানি : সজিনা ফুলের রস দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে মূত্রপাথরি দূর হয়। ফুলের রস হাঁপানি রোগের বিশেষ উপকারী।
গ্যাস থেকে রক্ষা : সজিনা পাতার রসের সাথে লবণ মিশিয়ে খেতে দিলে বাচ্চাদের পেট জমা গ্যাস দূর হয়।
কুকুরের কামড়ে : সজিনা পাতা পেষণ করে তাতে রসুন, হলুদ, লবণ ও গোলমরিচ মিশিয়ে সেবন করলে কুকুরের বিষ ধ্বংস হয়।
জ্বর ও সর্দি : পাতার শাক খেলে যন্ত্রণাধায়ক জ্বর ও সর্দি দূর হয়।
বহুমূত্র রোগ : সজিনা পাতার রসে বহুমূত্র নিয়ন্ত্রন করে।
অবশতা, সায়াটিকা : সজিনার বীজের তেল মালিশ করলে বিভিন্ন বাত বেদনা, অবসতা, সায়াটিকা, বোধহীনতা ও চর্মরোগ দূর হয়।
পাতার রস হৃদরোগ চিকিৎসায় এবং রক্তের প্রবাহ বৃদ্ধিতে ব্যবহার হয়।
পোকার কামড়ে এন্টিসেপ্টিক হিসেবে সজিনার রস ব্যবহার করা হয়।
ক্ষতস্থান সারার জন্য সজিনা পাতার পেস্ট উপকারী।
সজিনার শাকের গুনাবলি
সজিনা পাতা শাকের ন্যায় রান্না করে খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
মুখে রুচি বাড়ে : সজনে ডাটার মতো এর পাতারও রয়েছে যথেষ্ট গুণ।
সজিনা ফুল শাকের ন্যায় রান্না করে খেলে জল বসন্ত রােগ প্রতিরােধ হয়।
সজিনা টিউমার বৃদ্ধিতে বাধা দেয়।
সজিনা ক্যানসার প্রতিরােধেও ভূমিকা রাখে।
সজিনা গাছের পাতায় রয়েছে ভিটামিন A,C এবং E এতে আরাে রয়েছে উল্লেখযােগ্য পরিমাণ ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম এবং প্রােটিন।
এ বিশেষ উপকারী গাছটি মানবদেহের আরাে অনেক রােগ প্রতিরাোধে সহায়ক হয়।
সজিনার ঔষধি গুণাগুণ
ভারতীয় আয়ুর্বেদিক শাস্ত্র মতে, সজিনা গাছ ৩০০ রকমের রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করে। আধুনিক বিজ্ঞানও এ ধারণাকে সমর্থন করে। সজিনার কচি পড সবজি হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়। সজিনার বাকল, শিকড়, ফুল, ফল / ডাটা, পাতা, বীজ এমনকি এর আঠাতেও ঔষধিগুণ আছে।
সতর্কতা
সজনে এর মূল অনেক সময় বিষাক্ত হতে পারে, যা স্নায়ুকে অবশ করে দিতে পারে। তাই খাওয়ার ক্ষেত্রে এটি বর্জন করাই শ্রেয়।এছাড়া এর বীজ মাছ এবং র্যাবিট এর জন্যেও বিষাক্ত হতে পারে। তাই সতর্কতা অবলম্বন আবশ্যক। সূত্রঃ উইকিপিডিয়া
ডাঃ মোঃ আঃ হান্নান মিয়া (বি,এ)
ডি.এইচ.এম.এস (ঢাকা)
অহনা ভিলা, ধানুয়া কলেজ পাড়া, শিবপুর, নরসিংদী
রোগী দেখার সময়ঃ শুক্রবার বিকাল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
বাগদী প্রাইমারী স্কুলের পূর্ব পার্শ্বে, আব্দুল বাতেনের বাড়ি, কালিগঞ্জ, গাজীপুর
রোগী দেখার সময় বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
মোবাইলঃ ০১৭৩৯-৬৮২৬৯২, অথবা বার্তা পাঠান
(প্রতি শনিবার যোগাযোগ সাপেক্ষে রোগী দেখা হয়)
Share this post
https://bismillahhomeocare.com/সজিনা-গাছের-ছাল-পাতা-ফুল-ও-ডাটার-কিছু-গুরুত্বপূর্ণ-উপকারিতা-28